শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

বর্ষার আগেই প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ

তরফ নিউজ ডেস্ক: বর্ষার আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিয়ানমারকে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে জোর দেবে ঢাকা। এছাড়া নিরাপত্তা, কোথায় ফিরে যাবে, জীবিকার ব্যবস্থা সম্পর্কে রোহিঙ্গাদেরকে জানানোর বিষয়েও আলোচনা হতে পারে ১৯ জানুয়ারি বৈঠকে।

এ বিষয়ে  বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য প্রত্যাবাসন এবং বাংলাদেশ বাস্তবসম্মত পন্থায় অগ্রসর হবে। বর্ষার আগেই প্রত্যাবাসন শুরু করা যায় কিনা সেটি নিয়ে আলোচনা করতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের আত্নবিশ্বাস জরুরি। এজন্য আমরা এর আগে প্রস্তাব করেছিলাম, একদল রোহিঙ্গাকে রাখাইনে নিয়ে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি দেখানো। যাতে করে তারা ফেরত এসে অন্যদের বলতে পারে।’

 পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘প্রত্যাবাসনের জন্য দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থা আছে। পরবর্তীতে চীনের আগ্রহের ফলে ত্রিপক্ষীয় একটি মেকানিজম তৈরি করা হয়েছে। উভয়ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি আছে। আমরা এই অগ্রগতিকে কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সেটি নিয়েও কথা বলতে আগ্রহী।’
প্রাথমিকভাবে পরিবার ও গ্রামভিত্তিক প্রত্যাবাসনের ওপরে জোর দেওয়া হবে। কারণ, বিক্ষিপ্তভাবে অনেক রোহিঙ্গাই ফিরে যেতে চাইবে না বলে তিনি জানান।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা একটি গ্রামে যতজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছেন, তাদের একসঙ্গে ফেরত পাঠাতে চাই। এর ফলে ওই গ্রামের প্রতিটি পরিবার যেতে আগ্রহী হবে।’

এর জন্য যাচাই-বাছাই পরিবার ও গ্রামভিত্তিক হলে সবচেয়ে সুবিধা হবে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গত তিন বছরে পরিবার ও গ্রামভিত্তিক আট লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে সরবরাহ করেছে। এরমধ্যে মিয়ানমার মাত্র ৪২ হাজার যাচাই-বাছাই করেছে।

জাপান ও অন্যদের সম্পৃক্ততা

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার আলোচনায় চীন এরইমধ্যে যুক্ত হয়েছে। জাপান, ভারত এবং আসিয়ানভুক্ত অন্য রাষ্ট্রগুলোকেও  এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। যে কেউ এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হলে আমরা স্বাগত জানাবো।’

তিনি বলেন, ‘কোনও দেশ প্রত্যাবাসনে সহায়তা করলো এবং অন্য কোনও দেশ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জীবিকা বা বাড়িঘর তৈরি করে দিলো— এভাবে প্রত্যাবাসনের বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন দেশ সহায়তা করলে সবচেয়ে ভালো হয়।’

প্রসঙ্গত, নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে প্রথম ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয় ২০১৮ সালে। মন্ত্রীপর্যায়ে দুই দফা বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক,বাংলাদেশে চীন ও মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল এক বছর আগে।

 

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com